ইংল্যান্ডকে হারানোর লক্ষ্যে মাঠে নামছে বাংলাদেশ

বিশ্বকাপ মিশনের দ্বিতীয় ম্যাচে আজ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ সফলতার সাথেই পাশ করেছে বাংলাদেশ দল। এবার লক্ষ্য ইংরেজদের হারানো।

মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টায় শুরু হবে ম্যাচটি, যা সরাসরি সম্প্রচার করবে গাজী টেলিভিশন ও টি-স্পোর্টস।

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড দুটো দল ভিন্ন দুই পরিস্থিতিতে মাঠে নামছে। বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি থাকলেও ইংল্যান্ড শিবিরে কিছুটা হলেও অস্বস্তি বিরাজ করছে।

বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক জস বাটলার অবশ্য জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী তারা, দুটো দলই মাত্র একটা ম্যাচ খেলেছে। দল হিসেবে আমরা খুবই আশাবাদী। আমরা জানি গত ম্যাচের চেয়ে এই ম্যাচে (আগামীকাল) ভালো খেলতে পারি। আগামীকাল ভালো খেলতে মুখিয়ে আছি।

যদিও ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার জানিয়ে গেছেন তারা কোনও চাপ অনুভব করছেন না। তার ভাষায়, ‘না, একেবারেই না। বাংলাদেশের বিপক্ষে আমাদের অনেক দারুণ ম্যাচ রয়েছে। যাদের বিপক্ষে আমরা খেলি, তাদের আমরা শ্রদ্ধা করি। বিশ্বকাপে আপনি সত্যিই কঠিন প্রতিপক্ষ আশা করবেন।’

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটিকে উপভোগের মন্ত্র হিসেবে নিয়েছে গোটা দল। স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে গেছেন, ‘খুব গুরুত্বপূর্ণ হলো আমাদের ব্র্যান্ড অব ক্রিকেট খেলা- অ্যাপ্রোচ ও বডি ল্যাংগুয়েজ দিয়ে। আমাদের একই মানসিকতা ও একই লক্ষ্য নিয়ে আগাতে হবে। তো যদি আমরা আমাদের ব্র্যান্ড অব ক্রিকেটটা খেলতে পারি তবে জেতার ও সফল হওয়ার সুযোগ থাকবে।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো করতে হলে ব্যাটারদের রান করার কোন বিকল্প দেখেন না বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ। তিনি বলেন, ‘আমাদের ভালো ব্যাটিং করতে হলে বড় একটা জুটি গড়তে হবে। এটাই আমাদের মূল্য লক্ষ্য। আমরা যদি সঠিক একটা জুটি গড়তে পারি আমরা বড় একটা স্কোর গড়তে পারবো। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো করতে হলে এর কোনও বিকল্প নেই।’

এই ম্যাচকে ছাপিয়ে দুই দলের জন্যই দুঃচিন্তার কারণ ধর্মশালার আউটফিল্ড। এই মাঠে নতুন করে ঘাস লাগানোর পর মাঠ এখনও পুরোপুরি তৈরি হয়নি। এখন সবুজের নিচে ভারী বালির স্তর। ঘাসের ফাঁকে ফাঁকে দেখা যায় চিকচিকে বালি। কিছু জায়গায় দেখা মেলেছে গর্ত। যা খেলোয়াড়দের দৌড়ানো, ডাইভ দেওয়ার জন্য প্রবল ঝুঁকিপূর্ণ। এ জন্য ইংল্যান্ড ইনজুরিপ্রবণ বেন স্টোকসকে বিশ্রামে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সঙ্গে বাকিদের জন্য বেশ সতর্কতা জারি করেছে।

বাংলাদেশ অবশ্য এই ব্যাপারে নেতিবাচক কোন প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। মাঠ নিয়ে আলোচনা ছাপিয়ে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচটি জমে উঠবে এমন প্রত্যাশাই ক্রিকেটপ্রেমীদের।

প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়া ইংলিশরা জয়ে ফিরতে মরিয়াই হয়ে মাঠে নামবে। আর নির্ভার হয়ে আরও একটি জয় তুলে নিয়ে চেন্নাই যেতে পারলে বাংলাদেশের জন্য এটি হবে দারুণ এক অর্জন।

অতীত পরিসংখ্যানে ইংল্যান্ড বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও বিশ্বকাপে দুই দলই সমানে সমান। ২০০৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত বিশ্বকাপে চার ম্যাচের মুখোমুখি লড়াইয়ে দুটি করে ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড। ২০১১ বিশ্বকাপে সালে মাহমুদউল্লাহ-শরিফুলের দৃঢ়তায় ২ উইকেটে ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ। অন্যদিকে ২০১৫ সালে রুবেল হোসেন দারুণ বোলিংয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৫ রানে ম্যাচ হেরে টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে যায় ইংলিশরা। ২০১৯ বিশ্বকাপের মুখোমুখিতে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ। চার বছর পর আরও একবার ইংল্যান্ডকে হারিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ বাংলাদেশের সামনে। স্বাভাবিকভাবেই কিউইদের বিপক্ষে হেরে যাওয়া ইংল্যান্ড এই ম্যাচে কিছুটা হলেও চাপ নিয়ে মাঠে নামবে।

তবে দুই দলের সাম্প্রতিক পারফর্ম অবশ্য কথা বলছে ইংলিশদের পক্ষে। মার্চে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজে পেয়েছিল অনায়াস জয়। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচেও জয় পেয়েছিল ইংলিশরা। তবে বিশ্বকাপের মঞ্চে দুইবার ইংলিশদের হারানোর সুখস্মৃতি আছে বাংলাদেশের। আজ ধর্মশালায় সেই স্মৃতিই নিশ্চয়ই ফিরিয়ে আনতে চায় ইংল্যান্ড।

এএইচএ