আ.লীগ চায় বায়তুল মোকাররম, সিদ্ধান্ত পুলিশের
আওয়ামী লীগ ২৮ অক্টোবর শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটেই করতে চায়। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পুলিশের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের জানাজায় অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ তথ্য জানান।
এদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক চিঠিতেও পল্টন থানার ওসি সালাহউদ্দীন মিয়াকে এ কথা জানানো হয়েছে। মহানগর দক্ষিণের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের ওই চিঠি পাঠিয়েছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘২৮ অক্টোবর বাইতুল মাকাররামের দক্ষিণ গেইটে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে সেই সিদ্ধান্তে অটল আছে আওয়ামী লীগ, তবে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত পুলিশ নেবে।’
তিনি বলেন, বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেট, অনলি ওয়ান ভেন্যু আই মেনশন, আর দ্বিতীয় কোন কথা নয়। যেটা বলেছি সেটাই
বিএনপির পাশাপাশি আওয়ামী লীগকেও চিঠি পৌঁছে দেন পল্টন থানার ওসি সালাউদ্দিন মিয়া। চিঠিতে সমাবেশের বিকল্প দুটি স্থান চাওয়ার পাশাপাশি সাতটি বিষয়ে তথ্য জানতে চাওয়া হয়।
সমাবেশে লোকসমাগমের সংখ্যা, সময়, বিস্তৃতি, কোন কোন স্থানে মাইক লাগানো হবে, অন্য দলের কেউ উপস্থিত থাকবেন কি না এসব বিষয় জানতে চাওয়া হয়।
বিএনপি এরইমধ্যে ডিএমপির চিঠির জবার দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, তারা নয়াপল্টনেই সমাবেশ করবে।
আওয়ামী লীগের চিঠিতে বলা হয়েছে, বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে তাদের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গেছে। অল্প সময়ে মধ্যে অন্য কোনো জায়গায় নতুনভাবে সমাবেশের প্রস্তুতি গ্রহণ করা তাদের পক্ষে দুরূহ ব্যাপার।
আওয়ামী লীগ জানিয়েছে তাদের সমাবেশে প্রায় দুই লাখ মানুষের জমায়েত হবে। সকাল থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সমাবেশ চলবে।
সমাবেশ বআয়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেট থেকে পল্টন মোড়, পিজিও মোড, শিক্ষা ভবন, গোলাপ শাহ মাজার, নগর ভবন, নবাবপুর সড়ক, মহানগর নাট্যমঞ্চ সড়ক, দৈনি বাংলা মোড়, এবং মতিঝিল সড়ক, স্টেডিয়াম সড়ক পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।
সরকার পতনের দাবি আদায়ের ‘এক দফার চূড়ান্ত আন্দোলনের’ অংশ হিসেবে শনিবারের ওই সমাবেশ গত ১৮ অক্টোবর আহ্বান করা হয়।
সেদিন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শনিবারের মহাসমাবেশ থেকে তাদের মহাযাত্রা শুরু হবে। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি থেমে থাকব না।
এদিকে শনিবার বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে শান্তি ও উন্নয়নের সমাবেশ ডেকেছে আওয়ামী লীগ। গত ২০ অক্টোবর সমাবেশের স্থান উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বরাবর চিঠি দেন দলের মহানগর দক্ষিণের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ।
পরের দিন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আরেকটি চিঠিতে নয়াপল্টনে জমায়েত হওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে আরেকটি চিঠি দেন ডিএমপি কমিশনারকে। তবে ডিএমপির পক্ষ থেকে কোনো দলকেই সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
সমাবেশের দুই দিন আগে বৃহস্পতিবার জানা যায়, বুধবার দুই দলকেই সড়কের বদলে ময়দানে জমায়েত হওয়ার প্রস্তাব দিয়ে চিঠি দেয় মহানগর পুলিশ।
বুধবার ডিএমপির পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়, বিএনপিকে যেখানে অনুমতি দেওয়া হবে সেখানেই সমাবেশ করতে হবে।
দুই দলের সমাবেশ ঘিরে রাজনৈতিকসহ সব মহলে তুমুল আলোচনা চলছে। আওয়ামী লীগ বলছে, বিএনপি কোনো বিশৃঙ্খলা করলে কঠোর হবে তারা। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, সরকার তাদের আন্দোলন দমন করতে চায়।
এদিকে শনিবার যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত দল জামায়েতে ইসলামী শাপলা চত্বরে সমাবেশ করতে চাইলেও তাদের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।